করোনা মহামারির বছর ২০২০ চলে যাচ্ছে। বছরটা যারা বেঁচে পার করছেন, তারা যতদিন বেঁচে থাকবেন একেবারে আলাদা করেই এর কথা মনে রাখবেন। কারণ, এমন দুর্ভোগ আর দুঃসময়ে ভরা বছর এই প্রজন্ম বোধহয় আর দেখবে না।
করোনা দীর্ঘ যাত্রার সাথে সাথে মানুষকে দিয়েছে এমন কিছু সময় যা কখনো আসেনি জীবনজুড়েই। সুখ হেঁটে কারও কাছে আসে না, তাকে খুঁজে নিজের কাছে নিয়ে আসতে হয়।
করোনার কারণে মানুষ এখন আগের চেয়ে বেশি স্বাস্থ্য সচেতন হয়ে উঠেছে। কারণ, দেখা গেছে, আগে থেকে বিভিন্ন রোগে ভোগা মানুষকেই করোনা ভাইরাস বেশি কাবু করেছে। তাই সুস্থ জীবনযাপনের প্রতি মানুষের আগ্রহ বেড়েছে।
মানুষ এখন আগের চেয়ে বেশি পরিষ্কার-পরিচ্ছন জীবনযাপন করে। হাঁচি, কাশি দেয়ার সময় হাত দিয়ে মুখ ঢাকে। দোকানপাট, রেস্তোরাঁ, শহরের অলিগলি আগের চেয়ে বেশি পরিষ্কার রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে।
করোনা এসেছে বলেই মানুষ অনেকটা সময় ঘরে থাকতে বাধ্য হয়েছে। এই সময়ে দম্পতিদের একটা বড় অংশ একে অপরকে ঘরের কাজে সহায়তা করেছে। শুধু স্বামী-স্ত্রী নয় অধিকাংশ ক্ষেত্রে মা-বাবার সঙ্গে সন্তানের সম্পর্ক মহামারির সময়ে আরো গভীর হয়েছে। করোনায় বাধ্য হয়ে চালু হওয়া দীর্ঘ সময়ের হোম অফিস কখনো কখনো পরিবারকে দিয়েছে নিরন্তর ভালো সময়, যা আগে আসেনি।
করোনার কারণে পৃথিবীটা আরো বাসযোগ্য হয়ে উঠেছে। গবেষণায় দেখা গেছে, ২০২০ সালে কার্বন নিঃসরণ সাত ভাগ কমেছে, যা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে নতুন রেকর্ড৷ মানুষের যাতায়াত, বিমানযাত্রা, পর্যটন ইত্যাদি বন্ধ থাকাসহ নানা কারণে কার্বন নিঃসরণ কম হয়েছে।
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব নিয়ে বেশ কয়েকবছর ধরেই কখা হচ্ছে। কিন্তু অনেক উদ্যোগ নিয়েও যথেষ্ট ফল পাওয়া যাইনি। করোনার কারণে কিছুটা হলেও সেটা সম্ভব হয়েছে। এছাড়া মানুষের সমাগম কম থাকায় শহরের রাস্তায় বন্যপ্রাণীর ঘোরাফেরা, কক্সবাজার সৈকতের খুব কাছে হঠাৎ করেই মিলেছে এমন ডলফিনের দেখা।